সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী

বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পাঁচটি দিক উল্লেখ করুন। (৩৫তম বিসিএস লিখিত)

২০১১ সালের ৩০ জুন পাস হয় বহুল আলোচিত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল। এ বিলটির মাধ্যমে-

  1. -দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে থাকা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত, বর্তমান সরকারের মেয়াদেই অর্থাৎ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন পূর্বেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান।
  2. রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি পুন:প্রবর্তন।
  3. -রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ থাকলেও ধর্মনিরপেক্ষতা ও সকল ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়।
  4. -নির্বাচন কমিশনে দু’জন কমিশনারও বাড়ানো হয়।
  5. -বিশেষ ট্রাইব্যুনালে কেউ দণ্ডিত হলে তিনি ভোটার হওয়ার অযোগ্য হবেন। এর ফলে ’৭১-এ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের মধ্যে যারা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত হবেন তাদের ভোটাধিকার থাকবে না। এতে তারা আগামীতে নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না।
  6. -পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণ ও উন্নয়ন- ১৮(ক)
  7. -জাতীয় জীবনে মহিলাদের অংশগ্রহণ ১৯(৩)
  8. -উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি – ২৩ ক
  9. তত্ত্বাবধয়ায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল
  10. -নারী আসন বৃদ্ধি- ৪৫ থেকে ৫০
  11. -দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন
  12. -সংবিধান সংশোধনে গণভোট বাতিল ।
  13. -ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ পঞ্চম তফসিলে অন্তর্ভূক্ত
  14. -২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভূক্ত
  15. -১০ এপ্রিল, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সপ্তম তফসিলে অন্তর্ভূক্ত
  16. -বাকশাল সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত ।

-এছাড়া আগের চারটি সংশোধনী সপ্তম, একাদশ, দ্বাদশ, ও ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করা হয়।
ভবিষ্যতে কেউ ক্ষমতায় এসে যেন এই অনুচ্ছেদে সংশোধন-পরিবর্তন না আনতে পারে সেজন্য অনুচ্ছেদ ৭(ক)-এর পর নতুন অনুচ্ছেদ ৭(খ) যোগ করার প্রস্তাব দিয়ে বিলে বলা হয়েছে—

“এ সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যাহাই কিছু থাকুক না কেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথমভাগের সকল অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, নবম ক-ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের অনুচ্ছেদ ১৫০-সহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলোর বিধানাবলী সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোনো পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হইবে।”

অর্থাৎ সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।

বিলে অনুচ্ছেদ ৪-এর শিরোনাম দেয়া হয়েছে ‘জাতির পিতা’। বলা হয়, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সব সরকারি ও আধা-সরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করিতে হইবে।’

Add a Comment