সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল

বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলঃ বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে তথা ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে রাখা হয়েছিল। এর পর ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সময় সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর পর বিচারক অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণের বিষয় নিষ্পত্তির ভার দিতে গঠন করা হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল।

গঠনঃ প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের দুই সিনিয়র বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। এ কাউন্সিলের বিধি অনুয়ায়ী কমিটির শীর্ষস্থানীয় সদস্যদের স্বচ্ছ বলে বিবেচনা করে সুপ্রিমকোর্ট।’

সংবিধানের ৫ম ও ৮ম সংশোধনী অনুসারে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অনুমোদন দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট। এ কাউন্সিল এখন সংবিধানেরও অংশ হয়ে গেছে, কারণ সর্বোচ্চ আদালতের রায় সাংবিধানিকভাবেই চূড়ান্ত।

সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী আদালতের অবৈধ ঘোষণার পর সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনলেও তাতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এর পর ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সংবিধানে এই সংশোধনী মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করবে, এমন যুক্তিতে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট করেন আসদুজ্জামান সিদ্দিকীসহ সুপ্রিমকোর্টের ৯ জন আইনজীবী। ওই রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন। গত বছরের ১০ মার্চ মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৫ মে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ওই রায় দেন।

উক্ত রায়ে সংবিধানের ১১৬ নং অনুচ্ছেদ – অধস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত থাকবে বলা হয়েছে, তা সংবিধান পরিপন্থী বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া আপিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশের পর থেকে ক্ষমতা আবারও সুপ্রিমকোর্টের কাছে ফিরল বলে মন্তব্য করেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।


👉 Read More...👇