কিউএনএর ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ে রিয়াদ জড়িত

প্রথম আলোঃ ০৯ জুন ২০১৮


কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কাতার নিউজ এজেন্সির (কিউএনএ) ওয়েবসাইট হ্যাকিং ও আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলথানির ভুয়া বিবৃতি প্রকাশে সৌদি আরবের একটি চক্র জড়িত। এ চক্রটি রিয়াদের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের ভেতর থেকে কাজ করেছে। আলজাজিরার অনুসন্ধানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
এ বিষয়ে ৩ জুন আলজাজিরায় একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৪ মে কিউএনএ এবং সরকারের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো হ্যাক করা হয়। এতে উপসাগরীয় এলাকায় মারাত্মক কূটনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়। ওই বছরের ৫ জুন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), বাহরাইন ও মিশর কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। পাশাপাশি স্থল, জল ও আকাশ পথে কাতারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সৌদি আরব ও তার মিত্ররা কাতারের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদে’ সহযোগিতা ও আঞ্চলিক শত্রু ইরানের কর্মসূচি বাস্তবায়নের অভিযোগ আনে। দোহা এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে।

ওই ঘটনার পর কিউএনএতে কাতারের আমির শেখ তামিমের ভুয়া মন্তব্য প্রকাশের জন্য হ্যাকারদের শনাক্ত করতে দোহা অনুসন্ধান শুরু করে।
আজারবাইজানভিত্তিক একটা আমিরাতি কোম্পানি অনলাইন ও ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করা তুরস্কের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে কিউএনএসহ কয়েকটি অনলাইন নিউজ ওয়েবসাইটের নিরাপত্তার ত্রুটি চিহ্নিত করতে বলে। তারা ওই নিউজ ওয়েবসাইটগুলোর সুরক্ষার জন্য সমাধান দেওয়ারও প্রস্তাব করেন। আলজাজিরার অনুসন্ধান অনুযায়ী, এই তথ্য হাতে পাওয়ার পরই ইউএইর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি আজারবাইজানে তাঁর কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। এরপর ওই তথ্য সৌদি আরবের হ্যাকিং দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে কাতার ইনস্টিটিউট অব কম্পিউটারাইজেশন জানিয়েছে, উপসাগরীয় এলাকায় সংকট চলাকালে এবং তার আগে সৌদি আরব ও তার মিত্ররা ১৮৭টি টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই ঘটনার সময়ে আমেরিকার সরকারি সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা বুঝতে পেরেছিলেন, কিউএনএর ওয়েবসাইট এবং কাতার সরকারের টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হয়েছে। তবে তারা বুঝে উঠতে পারেননি, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

কাতারের লেখক আবদুল আজিজ আলইসহাক কাতারভিত্তিক নিউজ চ্যানেল আলজাজিরাকে বলেছেন, অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দোহা সফরকালে সৌদি আরবের বাদশা সালমান কিউএনএর ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের চক্রান্তের বিষয়টি জানতেন।

Add a Comment