মায়ানমার

বিগত সালের BCS Preliminary- তে এখান থেকে প্রশ্ন এসেছে 1 টি।

মায়ানমার বা মিয়ানমার (প্রাক্তন নাম ও কথ্যরূপ বর্মা বা বার্মা); প্রাচীন নাম ব্রহ্মদেশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। মায়ানমারের আনুষ্ঠানিক নাম হল মায়ানমার প্রজাতন্ত্র। মায়ানমারের রাজধানী নাইপিদো।

তৎকালীন বার্মার গণতান্ত্রিক সরকারের উৎখাতের পর ১৯৮৯ সালে সেখানকার সামরিক সরকার বার্মার নতুন নামকরণ করে “মায়ানমার” এবং প্রধান শহর ও তৎকালীন রাজধানী রেঙ্গুনের নতুন নাম হয় “ইয়াঙ্গুন”। তবে গণতান্ত্রিক দলগুলোর অনেক অনুসারীই এই নামকরণের বিপক্ষে। ২১ অক্টোবর ২০১০ থেকে দেশটির জাতীয় সঙ্গীত ও নতুন জাতীয় পতাকা প্রবর্তন করা হয়।

স্বাধীনতা (১৯৪৮-১৯৬২)

বার্মা স্বাধীন হয়েছিল অং সানের মৃত্যুর পর। ১৯৪৮ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত বার্মা চারটি বহুদলীয় নির্বাচন দেখেছে কিন্তু অং সানের সঙ্গে সম্পাদিত তিন প্রধান উপজাতীয়দের সঙ্গে চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। উপরন্তু বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য অঞ্চলে, যার মধ্যে রোহিঙ্গা–অধ্যুষিত আরাকান, যার বর্তমান নাম রাখাইন অঞ্চলও যুক্ত হয়।

সামরিক শাসন (১৯৬২-২০১১)

১৯৬২ সালের ২ মার্চ মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখল করে। সামরিক জান্তার প্রধান ছিলেন নে উইন। তারা ২৭ মে ১৯৯০ সালে প্রথম নির্বাচন দেয়। এ নির্বাচনে অং সান সু চি এর দল “ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি” ৪৯২ টি আসনের মধ্যে ৩৯২টি আসন পায়। কিন্তু নির্বাচনী আইনের মাধ্যমে তা বাতিল করা হয়। রেঙ্গুন নামটি ১৯৮৯ সালে সামরিক শাসকেরা পরিবর্তন করে রাখেন ইয়াঙ্গুন। নভেম্বর ২০০৫ সালে ইয়াঙ্গুন দেশের রাজধানীর মর্যাদা হারায়। বর্তমানে বার্মা বা মিয়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গুন থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অত্যন্ত পরিকল্পিত নতুন শহর নাইপিদোতে।

দেশটি বর্তমান সেনা প্রধান মিন অং হলাইং

অং সান সু চি

মিয়ানমারের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নেতা অং সানের কন্যা অং সান সুচি। তার দলের নাম National League for Democracy(NLD). (৩৯তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) মিয়ানমারে জান্তা বিরোধী আন্দোলেনের দৃঢ়তা, নিয়মতান্ত্রিকতা ও শান্তি প্রিয়তার জন্য ১৯৯১ সালে সু চি কে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তাকে অভিহত করা হয় এশিয়ার ম্যান্ডেলা নামে। সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার অমানবিক ব্যক্তিত্ব স্পষ্ট হওয়ায়, এশিয়ার ম্যান্ডেলা খ্যাত এ নেত্রীর ভাবমূর্তি এখন পতনোন্মুখ।

ARSA

The Arakan Rohingya Salvation Army(ARSA) রোহিঙ্গা জাতিগত একটি মুক্তিকামী সংগঠন। এ সংগঠনকে আগে বলা হত Faith Movement. ২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিক্রিয়া থেকে ২০১৬ সালে ARSA এর জন্ম হয়। স্থানীয়ভাবে এটি ‘হারাকাত আল ইয়াকিন’ নামে পরিচিত। সং গঠনটির প্রধান আতাউল্লাহ আবু আমর জুনুনি।

উগ্র বৌদ্ধ ধর্মগুরু উইরাথু

রোহিঙ্গা বিদ্বেষের জন্য বিশ্বে ব্যপকভাবে সমালোচিত কট্টর বৌদ্ধদের সংগঠন ‘মা বা থা’ এর নেতৃত্বে রয়েছে উগ্র বৌদ্ধ ধর্মগুরু আশিন উইরাথু। ২০১৪ সালে তিনি মুসলিম বিরোধী ও জাতীয়তাবাদী এ সংগঠন গড়ে তোলেন। ১ জুলাই ২০১৩ টাইম ম্যাগাজিন তাকে নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন করে। যার শিরোনাম ছিল ‘একজন বৌদ্ধ সন্ত্রাসীর মুখ(The Face of Buddhist Terror). উইরাথু নিজেকে মিয়ানমারের ‘বিন লাদেন’ বলে আখ্যায়িত করে থাকেন।

গণ হত্যায় ‘৯৬৯’

নিরীহ মুসলিম রোহিঙ্গাদের নির্যাতন, হত্যা এবং তাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিতে ২০১৪ সালে মিয়ানমার সানাবাহিনী গড়ে তোলে ‘৯৬৯’ নামে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এ গোষ্ঠীর সকল সদস্যই বৌদ্ধ ধর্মালম্বী। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা গণহত্যায় এরাও মাঠে নামে।

Operation Clearance

২৫ আগস্ট ২০১৭ ARSA যোদ্ধারা মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে ৩০টির মত পুলিশ ও সেনা চৌকিতে হামলা চালায়। এতে ১২ পুলিশ সদস্য নিহত হয় বলে দাবি করে দেশটির সরকার। এর পর থেকে রাখাই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় Operation Clearance নামের বর্বর ও নিষ্ঠুরতম এক সেনা অভিযান। বিদ্রোহী দমনের নামে এ অভিযানের কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা রূপ নেয় রোহিঙ্গা গণহত্যায়। এ অভিযানে সেনাবাহিনী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের কুখ্যাত যুদ্ধ কৌশল Three All Policy অনুসরণ করে। এ কৌশলের মূল কথা সবাইকে হত্যা কর, সব কিছু পুড়িয়ে দাও, সবকিছু লুট করো।

রোহিঙ্গা নিধন

ব্রিটিশরা তৎকালীন বার্মার স্বধীনতা পূর্ববর্তী ১৩৯ টি জাতিগোষ্ঠীর যে তালিকা প্রস্তুত করে তাতে রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভূক্ত করেনি। ১৯৪৮ সালে বার্মা স্বাধীন হলে, এ স্বাধীনতা রহিঙ্গাদের ভাগ্যে নিয়ে আসে এক অভিশাপ। ১৯৬২ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জেনারেল নে উইন ক্ষমতা দখল করে। তখন থেকে রোহিঙ্গা নির্যাতনের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। ১৫ অক্টবর, ১৯৮২ মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নাগরিক আইন প্রকাশ করে। এ আইনে মিয়ানমারে ১৩৫টি গোত্রভুক্ত মানুষকে মিয়ানমারের নাগরিক হিসাবে গণ্য করা হয়। রোহিঙ্গাদের গোত্র হিসাবে অস্বীকার করে সামরিক সরকার। ফলে তারা হয়ে যায় নিজভূমে পরবাসী। (৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি)

পেপার ক্লিপিং
আশা ও হতাশার ‘পেংলং সম্মেলন’****


👉 Read More...👇

Add a Comment