বিপিএসসি(BPSC)

সিভিল সার্ভিস কি
বাংলাদেশ সংবিধানে সিভিল সার্ভিস বা সিভিল সার্ভেন্ট বলে কিছু নেই। সেখানে- “প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ” কে ব্যক্তি হিসাবে উল্লেখ আছে। সরকারের অধীনের কর্মরত সকল কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত হয় সিভিল সার্ভিস। প্রতিরক্ষা বিভাগে সরকারের অনেক কর্মকর্তা কর্মরত থাকলেও তাদেরকে সিভিল সার্ভিসের অন্তর্ভূক্ত করা হয় না। সিভিল সার্ভেন্টদের মূল কাজ কর্মসূচি(Policy) বস্তবায়ন। কর্মসূচি তৈরির কাজ করে মন্ত্রণায়ল। কোন বিষয়কে কর্মসূচি হিসাবে নেওয়া হবে বা হবে না, তা নির্ধারণের দায়িত্ব একান্তই মন্ত্রণালয়ের। কর্মকর্তাগণ শুধু কর্মসূচি তৈরিতে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে মন্তণায়ল বা কেবিনেটকে সহায়তা করে। তারপর প্রণীত সে সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন।

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ধারা-
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসকে সময়ের প্রেক্ষিতে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়-

  1. বৃটিশ আমল( Indian Civil Service ১৭৫৭-১৯৪৭) ১৯৩৩ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিসে ৩৬% ভারতীয় ছিল। বাকিরা ছিলেন বিদেশি।
  2. পাকিস্তান আমল(Central Supirior Service of Pakistan ১৯৪৭-১৯৭১) ১৯৬৩ সালের এক সমীক্ষায় দেখা যায়- ৭৪১ জন কর্মকর্তার মধ্যে মাত্র ৫১জন ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের।
  3. বাংলাদেশ আমল( Bangladesh Civil Service ১৯৭১ থেকে বর্তমান)

বিপিএসসি
১৯৭২ সালের এক প্রেসিডন্সিয়াল অর্ডারের ৩৪ নং ধারা বলে বিপিএসসি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। তখন দুটি বিপিএসসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। একটি নিয়োগ দিত প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা, অপরটি নিয়োগ দিত দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা। পরে ১৯৭৭ সালে এই দুটি উইয়িংকে একীভূত করা হয়। উল্লেখ করা যায় যে ১৯৭৯ সালের আগে বিসিএস ক্যাডার নিয়োগে বর্তমানের তুলনায় তেমন কোন পরীক্ষা নেওয়া হত না। মৌখিক পরীক্ষা বা নামে মাত্র লিখিত পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হত। ১৯৭৯ সালে ব্যাচই প্রথম ব্যাচ যারা বর্তমানের মত একটি প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষা দিয়ে নিয়োগ পায়। এরপর ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ আইন পাশ হলে ঐ রকম প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমেই বিপিএসসি নিয়োগ দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন গঠিত হয় চেয়ারম্যান সহ ৬-১৫ জন সদস্য নিয়ে। বর্তমানে চেয়ারম্যান সহ মোট ১৫ জন সদস্য কর্মরত আছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান- ড. মোহাম্মদ সাদিক।

সংবিধান ও বাংলাদেশ কর্ম কমিশন
বাংলাদেশ সংবিধানের নবমভাগ- বাংলাদেশের কর্মবিভাগ, এর ২য় পরিচ্ছেদ- সরকারী কর্ম কমিশন। কর্ম কিমশন সম্পর্কে অনুচ্ছেদ আছে পাঁচটি

১৩৭। কমিশন-প্রতিষ্ঠা- আইনের দ্বারা এক বা একাধিক কর্ম কমিশন প্রতিষ্ঠা করা যাবে।
১৩৮। সদস্য-নিয়োগ- সভাপতি ও সদস্যদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
১৩৯। পদের মেয়াদ- নিয়োগের তারিখ থেকে পাঁচ বছর বা অধিষ্ঠিত ব্যক্তির বয়স ৬৫বছর যেটি আগে ঘটবে।
১৪০। কমিশনের দায়িত্ব- প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগদানের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদিগকে মনোনয়নের উদ্দেশ্যে যাচাই ও পরীক্ষা-পরিচালনা ও অন্যান্য।
১৪১। বার্ষিক রিপোর্ট- প্রত্যেক কমিশন প্রতি বৎসর মার্চ মাসের প্রথম দিবসে বা তাহার পূর্বে পূর্ববর্তী একত্রিশে ডিসেম্বরে সমাপ্ত এক বৎসরে স্বীয় কার্যাবলী সম্বন্ধে রিপোর্ট প্রস্তুত করিবেন এবং তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবেন।

২০০৪ সালে সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে পিএসসির চেয়ারম্যানের অবসরের বয়স ৬২ বছর থেকে ৬৫ বছর করা হয়।

বর্তমান চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ
ড. মোহাম্মদ সাদিক ১৯৫৫ সালে সুনামগঞ্জ জেলার ধাড়ারগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৬ সালের ২ মে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন। এর পূর্বে তিনি গত ৩ নভেম্বর ২০১৪ থেকে এ কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

বর্তমানে চেয়ারম্যান সহ পিএসসির সদস্য সংখ্যা ১৫ জন। তাদের মাঝে দুজন মহিলা সদস্য আছেন-
প্রফেসর ড. এস এম আনোয়ারা বেগম
নূরজাহান বেগম,এনডিসি