প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম

  • বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানরীতি অনুসারে তৎসম শব্দের ৬টি নিয়ম উদাহরণসহ লিখুন। (৩৬তম বিসিএস লিখিত)
  • বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম লিখুন। (৩৮তম বিসিএস লিখিত)

প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম
বাংলা একাডেমি

অবিকৃত তৎসম শব্দ, হ্রস্বকার ও দীর্ঘ কার, রেফ, সন্ধির ফলে ম অনুস্বার হওয়া, ইন্‌ প্রত্যয়ান্ত শব্ধ, বিসর্গ এই ছয়টি হল তৎসম শব্দের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম।

১. তৎসম শব্দ

১.১.
তৎসম অর্থাৎ বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত অবিকৃত সংস্কৃত শব্দের বানান যথাযথ ও অপরিবর্তিত থাকবে। কারণ এইসব শব্দের বানান ও ব্যাকরণগত প্রকরণ ও পদ্ধতি নির্দিষ্ট রয়েছে।

১.০২.
যে-সব তৎসম শব্দে ই, ঈ বা উ, ঊ উভয়ই শুদ্ধ, সেসব শব্দে কেবল ই বা উ এবং তার –কার চিহ্ন ই-কার, উ-কার ব্যবহৃত হবে। যেমন: কিংবদন্তি, খঞ্জনি, চিৎকার, ধমনি, ধরণি, নাড়ি, পঞ্জি, পদবি, ভঙ্গি, মঞ্জরি, মসি, রচনাবলি, শ্রেণি, লহরি, সরণি, সূচিপত্র, উর্ণা, উষা।

১.০৩.
রেফ-এর পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হবে না। যেমন: অর্চনা, অর্জন, অর্থ, অর্ধ, কর্দম, কর্তন, কর্ম, কার্য, গর্জন, মূর্ছা, কার্তিক, বার্ধক্য, বার্তা, সূর্য। কিন্তু অর্চ্চনা, অর্জ্জন ইত্যাদি লেখা যাবে না।

১.০৪
সন্ধির ক্ষেত্রে ক খ গ ঘ পরে থাকলে পদের অন্তস্থিত ম্ স্থানে অনুস্বার হবে । যেমন: অহম্‌ + কার = অহংকার। এভাবে ভয়ংকর, সংগীত, শুভংকর, হৃদয়ংগম, সংঘটন।
সন্ধিবদ্ধ না হলে ঙ স্থানে অনুস্বার হবে না। যেমন- অঙ্ক, অঙ্গ, আতঙ্ক, কঙ্কাল, গঙ্গা, বঙ্কিম, বঙ্গ, লঙ্ঘন, শঙ্কা, শৃঙ্খলা, সঙ্গে সঙ্গী, আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি।

১.৫
সংস্কৃত ইন্‌ প্রত্যয়ান্ত শব্দের ঈ-কারান্ত রূপ সমাস বদ্ধ হলে সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়ম অনুযায়ী সেগুলোতে ই/ঈ কার উভয়ই ব্যবহার করা যাবে।
গুণী>গুণীজন/গুণিজন
প্রাণী>প্রাণীবিদ্যা/প্রাণিবিদ্যা
মন্ত্রী>মন্ত্রীপরিষদ/মন্ত্রিপরিষদ

তবে ইন্‌ প্রত্যয়ান্ত শব্দের সঙ্গে ত্ব ও তা প্রত্যয় যুক্ত হলে ই-কার হবে।
কৃতী>কৃতিত্ব
দায়ী>দায়িত্ব
প্রতিযোগী>প্রতিযোগিতা
মন্ত্রী>মন্ত্রিত্ব
সহযোগী>সহযোগিতা

১.৬
শব্দের শেষে বিসর্গ থাকবে না। যেমন: ইতস্তত, কার্যত, ক্রমশ, পুনঃপুন, প্রথমত, প্রধানত, প্রয়াত, প্রায়শ, ফলত, বস্তুত, মূলত।

এছাড়া নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে শব্দমধ্যস্থ বিসর্গ-বর্জিত রূপ গৃহীত হবে। যেমন : নিস্তব্ধ, দুস্থ, নিস্পৃহ, নিশ্বাস।
কেন?

নিস্তব্ধ শব্দটি সন্ধির ফলে গঠিত হয়নি। এটি প্রকৃতি প্রত্যয়জাত (সং) নি+√স্তন্‌ভ্‌+ত(ক্ত)

নিস্পন্দ ও নিঃস্পন্দ দুটোই ঠিক। কেনো প্রথমটি উপসর্গের মাধ্যমে গঠিত- নি(নাই) + স্পন্দ= নিস্পন্দ
দ্বিতীয়টি সন্ধির মাধ্যমে- নিঃ+স্পন্দ=নিঃস্পন্দ।

অনুরূপ যুক্তি কিন্তু নিশ্বাস/নিঃস্বাস এর ক্ষেত্রেও দেওয়া যায়। কেনো বাংলা একাডেমির অভিধানে এ শব্দ দুটিও ঠিক। তবে মনে রাখা দরকার নিশ্বাসের নি উপসর্গ নাই অর্থে ব্যবহার হয়নি। কেনো আমরা ফুসফুসে দম নেওয়া কে নিশ্বাস বলি।

একই যুক্তিতে দুস্থ ও দুঃস্থ উভয় ঠিক। এখানে উপসর্গের দু মন্দ অর্থে ব্যবহার হয়েছে।


২. অতৎসম শব্দ

২.০১.ই ঈ উ ঊ
সকল অ-তৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশী, বিদেশী, মিশ্র শব্দে কেবল ই এবং উ এবং এদের -কার চিহ্ন ই-কার এবং উ-কার ব্যবহৃত হবে ৷ এমনকি স্ত্রীবাচক ও জাতিবাচক ইত্যাদি শব্দের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে ৷ যেমন: গাড়ি, চুরি, দাড়ি, বাড়ি, ভারি, শাড়ি, তরকারি, বোমাবাজি, দাবি, হাতি, বেশি, খুশি, হিজরি, আরবি, ফারসি, ফরাসি, বাঙালি, ইংরেজি, জাপানি, জার্মানি, ইরানি, হিন্দি, সিন্ধি, ফিরিঙ্গি, সিঙ্গি, ছুরি, টুপি, সরকারি, মাস্টারি, মালি, পাগলামি, পাগলি, দিঘি, কেরামতি, রেশমি, পশমি, পাখি, ফরিয়াদি, আসামি, বে-আইনি, ছড়ি, কুমির, নানি, দাদি, বিবি, মমি, চাচি, মাসি, পিসি, দিদি, বুড়ি, ছুঁড়ি, নিচে, নিচু, ইমান, চুন, ভুব, বুখা, মুলা, পুজো, উনিশ, উনচল্লিশ।

সর্বনাম পদরূপে এবং বিশেষণ ও ক্রিয়া-বিশেষণ পদরূপে কী শব্দটি ঈ-কার দিয়ে লেখা হবে। যেমন- কী করছ? কী পড়ো? কী খেলে? কী আর বলবো? কী যে করি! এটা কী বই? কী করে যাব? কী বুদ্ধি নিয়ে এসেছিলে? কী আনন্দ! কী দুরাশা!

অন্য ক্ষেত্রে অব্যয় পদরূপে ই-কার দিয়ে কি শব্দটি লেখা হবে।অর্থাৎ যে সকল প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ অথনা না দিয়ে দেওয়া যায়। যেমন- তুমিও কি যাবে? সে কি এসেছিল? কি বাংলা কি ইংরেজি উভয় ভাষায় তিনি পারদর্শী।

পদাশ্রিত নির্দেশক টি-তে ই-কার হবে। যেমন: ছেলেটি, লোকটি, বইটি।

২.০২. এ, অ্যা
বাংলায় এ বর্ণ বা এ-কার দিয়ে এ এবং অ্যা এই উভয় ধ্বনি নিদের্শিত হয়। যেমন : কেন, কেনো (ক্রয় করো); খেলা, খেলি; গেল, গেলে, গেছে; দেখা, দেখি; জেনো, যেন।
তবে কিছু তদ্ভব এবং বিশেষভাবে দেশি শব্দ রয়েছে যেগুলির য-ফলা -আকার যুক্ত রূপ বহুল পরিচিত। যেমন : ব্যাঙ, ল্যাঠা । এসব শব্দে য-ফলা -আকার অপরিবর্তিত থাকবে ।
বিদেশি শব্দে ক্ষেত্ৰ-অনুযায়ী অ্যা বা য-ফলা -আকার ব্যবহৃত হবে। যেমন : অ্যাকাউন্ট, অ্যান্ড (and), অ্যাসিড, ক্যাসেট, ব্যাংক, ভ্যাট, ম্যানেজার, হ্যাট।

২.৩ ও
বাংলা অ-কারের উচ্চারণ বহুক্ষেত্রে ও-কার হয়৷ শব্দের এসব অ-ধ্বনি ও-কার দিয়ে লেখা যেতে পারে। যেমন- কালো, খাটো, ছোটো, ভালো, এগারো , বারো , তেরো , পনেরো , ষো লো, সতেরো , আঠারো ; করানো, খাওয়ানো, চড়ানো, চরানো, চালানো, দেখানো, নামানো, পাঠানো, বসানো, শেখানো, শানানো, হাসানো; কুড়ানো, নিকানো, বাঁকানো, বাঁধানো, ঘোরালো, জোরালো, ধারালো, প্যাচানো; করো , চড়ানো, জেনো, ধরো , পড়ানো, বলো, বসানো, শেখানো; করাতো, কেনো, দেবো, হতো, হবো, হলো; কোনো, মতো।

ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞায় শব্দের আদিতেও ও-কার লেখা যেতে পারে। যেমন : কোরো , বোলো, বোসো।

২.০৪ অনুস্বার , ঙ
তৎসম শব্দে অনুস্বার এবং ঙ যেখানে যেভাবে ব্যবহার্য ও ব্যাকরণসম্মত সেইভাবে ব্যবহার করতে হবে। যেমন: রং, সং, পালং, ঢং, রাং, গাং। তবে শব্দে অব্যয় বা বিভক্তি যুক্ত হলে কিংবা পদের মধ্যে বা শেষে স্বরচিহ্ন থাকলে ঙ হবে৷ যেমন- বাঙালি, ভাঙা, রঙিন, রঙের। বাংলা ও বাংলাদেশ শব্দ-দু’টি অনুস্বার দিয়ে লিখতে হবে৷ বাংলাদেশের সংবিধানে তাই করা হয়েছে।

এই উচ্চারণকে লিখিত রূপ দেওয়ার জন্য ক্রিয়াপদের বেশ কয়েকটি রূপের এবং কিছু বিশেষণ ও অব্যয় পদের শেষে, কখনো আদিতে অনেকে যথেচ্ছভাবে ো-কার ব্যবহার করছেন৷ যেমন: ছিলো, করলো, বলতো, কোরছ, হোলে, যেনো, কেনো (কীজন্য), ইত্যাদি ও-কারযুক্ত বানান লেখা হচ্ছে৷ বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া অনুরূপ ো-কার ব্যবহার করা হবে না৷

২.০৫ ক্ষ, খ
ক্ষীর, ক্ষুর ও ক্ষেত শব্দ খির, খুর ও খেত না লিখে সংস্কৃত মূল অনুসরণে ক্ষীর, ক্ষুর ও ক্ষেত-ই লেখা হবে। তবে অ-তৎসম শব্দ খুদ, খুদে, খুর, খেপা, খিধে ইত্যাদি লেখা হবে।

২.০৬ জ, য
বাংলায় প্রচলিত বিদেশী শব্দ সাধারণভাবে বাংলা ভাষার ধ্বনিপদ্ধতি অনুযায়ী লিখতে হবে। যেমন: কাগজ, জাহাজ, জাদু, হাজার, বাজার, জুলুম, জেব্রা। ইসলাম-ধর্ম সংক্রান্ত কয়েকটি শব্দ বিকল্পে ‘য’ লেখা যেতে পারে। যেমন- আযান, অযু, কাযা, নামায, ম্যায্‌যিন, যোহর, রমযান, হযরত।

২.০৭ মূর্ধন্য ণ, দন্ত্য ন
তৎসম শব্দের বানানে ণ, ন-য়ের নিয়ম ও শুদ্ধতা রক্ষা করতে হবে। এ-ছাড়া তদ্ভব, দেশী, বিদেশী, মিশ্র কোনো শব্দের বানানে ণত্ব বিধি মানা হবে না। যেমন- অঘ্রান, ইরান, কান, কুরআন, গুনতি, গোনা, ঝরনা, ধরন, পরান, সোনা, হর্ন, রানি, সোনা।

তৎসম শব্দে ট ঠ ড ঢ-য়ের পূর্বে ‘ণ’ হয়। যেমন- কণ্টক, লুণ্ঠন, প্রচণ্ড। কিন্তু তৎসম ছাড়া অন্যান্য সকল শব্দের ক্ষেত্রে ট ঠ ড ঢ-য়ের আগেও কেবল ন হবে। গুন্ডাটি লন্ঠন হাতে ঝান্ডা ধরে ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করে দিল।

২.০৮ শ, ষ, স
তৎসম শব্দে শ, ষ, স-য়ের নিয়ম মানতে হবে। এ-ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রে সংস্কৃতের ষত্ব-বিধি প্রযোজ্য হবে না।
বিদেশি শব্দের ক্ষেত্রে ‘ষ’ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। যেমন- কিশমিশ, নাশতা, পোশাক, বেহেশ্‌ত, স্মার্ট, হিসাব, স্টল, স্টাইল, স্টিমার, স্ট্রিট, স্টুডিয়ো, স্টেশন, স্টোর। ইসলাম, তসলিম, মুসলমান, মুসলিম, শয়তান, শরবত, শরম, শহর, শামিয়ানা, শার্ট, শৌখিন, আপস, জিনিস, মসলা, সন, সাদা, সাল, সালাত, সালাম, এশা, শাওয়াল(হিজরি মাস)

ইংরেজি ও ইংরেজির মাধ্যমে আগত বিদেশি ধ্বনির S এর জন্য স এবং, -sh, -sion, -ssion, -tion প্রভৃতি বর্ণগুচ্ছ বা ধ্বনির জন্য শ ব্যবহৃতি হবে। যেমন- পাসপোর্ট, বাস, ক্যাশ, টেলিভিশন, মিশন, সেশন, রেশন, ইত্যাদি।

যেখানে বিদেশি শব্দের বানান পরিবর্তিত হয়ে স, ছ-এর রূপ লাভ করেছে সেখানে ছ-এর ব্যবহার থাকবে। যেমন- তছনছ, পছন্দ, মিছরি, মিছিল।

২.০৯ বিদেশি শব্দ ও যুক্ত বর্ণ
বাংলায় বিদেশী শব্দের বানানে যুক্তবর্ণকে বিশ্লিষ্ট করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যুক্তবর্ণের সুবিধা হচ্ছে তা উচ্চারণের দ্বিধা দূর করে। তাই ব্যাপকভাবে বিদেশী শব্দের বানানে যুক্তবর্ণ বিশ্লিষ্ট করা অর্থাৎ ভেঙে দেওয়া উচিত নয়। শব্দের আদিতে তো অনুরূপ বিশ্লেষ সম্ভবই নয়। যেমন: স্টেশন, স্ট্রিট, স্প্রিং। তবে কিছু কিছু বিশ্লেষ করা যায়। সেপ্‌টেম্‌বর, অক্‌টোবর, মার্ক্‌স, শেক্‌সপিয়ার, ইস্‌রাফিল।

২.১০ হস্-চিহ্ন যথাসম্ভব বর্জন করা হবে। যেমন- কাত, মদ, চট, ফটফট, কলকল, ঝরঝর, তছনছ, জজ, টন, হুক, চেক, ডিশ, করলেন, বললেন, শখ, টাক, টক। তবে যদি ভুল উচ্চারণের আশঙ্কা থাকে তাহলে হস্-চিহ্ন ব্যবহার করা যেতে পারে৷ যেমন: উহ্, যাহ্, ওয়াক্‌ফ। যদি অর্থের বিভ্রান্তির আশঙ্কা থাকে তাহলেও তুচ্ছ অনুজ্ঞায় হস্-চিহ্ন ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন: কর্, ধর্, মর্, বল্।

২.১১ ঊর্ধ্ব-কমা
ঊর্ধ্ব-কমা যথাসম্ভব বর্জন করা হবে। যেমন- করল (=করিল), ধরত, বলে (=বলিয়া), হয়ে, দু জন, চার শ, চাল (=চাউল), আল (=আইল)।

৩. বিবিধ

৩.০১ সমাসবদ্ধ পদ
সমাসবদ্ধ পদগুলি একসঙ্গে লিখতে হবে, মাঝখানে ফাঁক রাখা চলবে না। যেমন- সংবাদপত্র, অনাস্বাদিতপূর্ব, পূর্বপরিচিত, রবিবার, মঙ্গলবার, স্বভাবগতভাবে, লক্ষ্যভ্রষ্ট, বারবার, বিষাদমণ্ডিত, সমস্যাপূর্ণ, অদৃষ্টপূর্ব, দৃঢ়সঙ্কল্প, সংযতবাক, নেশাগ্রস্ত, পিতাপুত্র। বিশেষ প্রয়োজনে সমাসবদ্ধ পদটিকে একটি, কখনো একটির বেশি হাইফেন (-) দিয়ে যুক্ত করা যায়। যেমন- মা-মেয়ে, মা-ছেলে, বেটা-বেটি, বাপ-বেটা, ভবিষ্যৎ-তহবিল, সর্ব-অঙ্গ, বে-সামরিক, স্থল-জল-আকাশ-যুদ্ধ, কিছু-না-কিছু।

৩.০২ বিশেষণ পদ
বিশেষণ পদ সাধারণভাবে পরবর্তী পদের সঙ্গে যুক্ত হবে না। যেমন- সুনীল আকাশ, স্তব্ধ মধ্যাহ্ন, সুগন্ধি ফুল, লাল গোলাপ, ভালো দিন, সুন্দরী মেয়ে। কিন্তু যদি সমাসবদ্ধ পদ অন্য বিশেষ্য বা ক্রিয়াপদের গণ বর্ণনা করে তাহলে স্বভাবতই সেই যুক্তপদ একসঙ্গে লিখতে হবে। যেমন- কতদূর যাবে, একজন অতিথি, তিনহাজার টাকা, বেশিরভাগ ছেলে, শ্যামলা-বরন মেয়ে। তবে কোথাও কোথাও সংখ্যাবাচক শব্দ একসঙ্গে লেখা যাবে। যেমন-দুজনা।


৩.০৩ নাই, নেই, না, নি
নাই, নেই, না, এই নঞর্থক অব্যয়পদগুলো শব্দের শেষে যুক্ত না হয়ে পৃথক থাকবে। যেমন- বলে নাই, পাব না, তার মা নেই, আমার ভয় নাই। ‘নি’ সমাসবদ্ধ পদরূপে একত্রে বসবে, যেমন- করিনি, যাইনি ইত্যাদি।
তবে শব্দের পূর্বে নঞর্থক উপসর্গরূপে না উত্তরপদের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। যেমন-নারাজ, নাবালক, নাহক।
অর্থ পরিস্ফুট করার জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুভূত হলে ‘না’-এর পরে হাইফেন ব্যবহার করা যায়। যেমন- না-বলা বাণী, না-শোনা কথা, না-গোণা পাখি।

৩.০৪ ও
অধিকন্তু অর্থে ব্যবহৃত ‘ও’ প্রত্যয় শব্দের সঙ্গে কার-চিহ্ন রূপে যুক্ত না হয়ে পূর্ণ রূপে শব্দের পরে যুক্ত হবে। যেমন- আজও, আমারও, কালও, তোমারও।

৩.০৫ ই
নিশ্চায়ক অর্থে ‘ই’ শব্দের সঙ্গে কার-চিহ্ন রূপে যুক্ত না হয়ে পূর্ণ রূপে বসবে। যেমন- আজই, এখই।

৪ ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থারঃ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার নাম এই নিয়মের আওতাভুক্ত নয়।


👉 Read More...👇

Add a Comment